১৯৭৩ সাল থেকে অদ্যবধি ওয়ানডে ক্রিকেটে ভুরি ভুরি অলরাউন্ডার দেখেছে ক্রিকেট বিশ্ব। বিশ্বকাপে জেতানে থেকে শুরু করে সর্বস্তরের ক্রিকেটে অলরাউন্ডারদের পারফরম্যান্সের ছড়াছড়ি। অলরাউন্ডার সেই ক্রিকেটার যিনি ব্যাটে বলে দুক্ষেত্রেই দলের জন্য অবদান রাখেন। বর্তমান যুগের ক্রিকেটারদের মধ্যে অলরাউন্ডারদের অবদান অনস্বীকার্য। একজন সাকিব আল হাসানের কথাই ধরুন, যাকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের পোস্টার বয় বলা হয়। সেই ২০০৭ সাল থেকে শুরু করে আজও অলরাউন্ডারদের র্যাংকিংয়ে প্রায়ই শীর্ষস্থান দখল করে আসছেন। আজকে আমরা জানবো ১৯৭৩ সাল থেকে আজ পর্যন্ত ওয়ানডে বা একদিনের ম্যাচে সেরা ১০ জন অলরাউন্ডারদের পারফরম্যান্সের উপর ভিত্তি করে একটি পরিসংখ্যান।

ক্রমিক | নাম ও দেশ | ম্যাচ | রান সংখ্যা | উইকেট সংখ্যা |
১। | সনাৎ জয়সুরিয়া (শ্রীলঙ্কা) | ৪৪৫ | ১৩৪৩০ | ৩২৩ |
২। | জ্যাক ক্যালিস (দঃ আফ্রিকা) | ৩২৮ | ১১৫৭৯ | ২৭৩ |
৩। | শহীদ আফ্রিদী (পাকিস্তান) | ৩৯৮ | ৮০৬৪ | ৩৯৫ |
৪। | সাকিব আল হাসান(বাংলাদেশ) | ২০৬ | ৬৩২৩ | ২৬০ |
৫। | আব্দুর রাজ্জাক (পাকিস্তান) | ২৬৫ | ৫০৮০ | ২৬৯ |
৬। | ওয়াসিম আকরাম (পাকিস্তান) | ৩৫৬ | ৩৭১৭ | ৫০২ |
৭। | কপিল দেব (ভারত) | ২২৫ | ৩৭৮৩ | ২৫৩ |
৮। | শন পোলক (দঃআফ্রিকা) | ৩০৩ | ৩৫১৯ | ৩৯৩ |
৯। | ক্রিস কোয়ার্নস (নিউজিল্যান্ড) | ২১৫ | ৪৯৫০ | ২০১ |
১০। | ক্রিস হ্যারিস (নিউজিল্যান্ড) | ২৫০ | ৪৩৭৯ | ২০৩ |
শীর্ষ ১০ জন ওয়ানডে অলরাউন্ডার বাছাই করতে নূন্যতম ২০০ উইকেট এবং ৩০০০ রানকে গ্রহণ করা হয়েছে।
**সনাৎ জয়সুরিয়া, জ্যাক ক্যালিস এবং শহীদ আফ্রিদীর পর সাকিব আল হাসান চতুর্থ অলরাউন্ডার যিনি একদিনের ম্যাচে কমপক্ষে ৬০০০ রান এবং ২৫০ উইকেট পেয়েছেন।
*** সাকিব আল হাসান সবচেয়ে দ্রুততম সময়ে ৬০০০ রান করা এবং ২৫০ উইকেট পাওয়া অলরাউন্ডার। তিনি এ রেকড করতে ২০২ ম্যাচ খেলেছেন যেখানে শহীন আফ্রিদী ২৯৪ ম্যাচ, জ্যাক ক্যালিস ২৯৬ ম্যাচ এবং জয়সুরিয়া ৩০৪ ম্যাচ খেলেছেন।
*** সাকিব আল হাসান বিশ্বের একমাত্র ক্রিকেটোর যিনি ২০০৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত লম্বা সময় ধরে ওয়ানডের শীর্ষস্থনে নিয়মিত থাকা একমাত্র ক্রিকেটার। অন্যরা সাময়ীক শীর্ষ হলেও পরে ঝরে গেছেন।
এখন আসুন শীর্ষ ১০ জন অলরাউন্ডারের প্রফাইল নিয়ে আলোচনা করা যাক।
১। সনাৎ জয়সুরিয়া (শ্রীলঙ্কা): ১৯৮৯ সালের ২৬ ডিসেম্বর অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অভিষেক হওয়ার পরে ২০১১ সালের ২৮ জুন ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিলেন।
দীর্ঘ প্রায় ২২ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে খেলেছেন দাপটের সাথে। মাতারা হ্যারিকেন খ্যাত এই অলরাউন্ডার মূলত পরিচিত তিনি আগ্রাসী ব্যাটসম্যান হিসেবে। ৪৪৫ টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে ৪৩৩ ইনিংস ব্যাট করে, ১৮ বার অপরাজিত থেকে ১৩,৪৩০ রান করেন। যার সর্বচ্চ রানের ইনিংস ১৮৯, তার ব্যাটিং গড় ৩২.৩৬ এবং স্ট্রাইকরেট ৯১.২০। তিনি ১৫০০ টি ৪ এবং ২৭০ টি ছক্কার মালিক। ২৮ টি শতক এবং ৬৮ টি অর্ধশতক তার ব্যাটিং ক্যারিয়ারকে নিয়ে গেছে অনন্য এক উচ্চতায়। তিনি ৪৪৫ ম্যাচে ৩৬৮ ইনিংসে বল করে ৩৬.৭৫ গড়ে ৩২৩ টি উইকেট পান। তার শ্রেষ্ট বোলিং পারফরমেন্ট হচ্ছে ২৯ রানে ৬ উইকেট। তিনি শ্রীলংকার বিশ্বকাপ জয়ী দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন।

২। জ্যাক ক্যালিস (দক্ষিণ আফ্রিকা): জ্যাক ক্যালিস দক্ষিণ আফ্রিকা দলের একজন অন্যতম সেরা খেলোয়ার। কারো কারো মতে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়।

৩।শহীদ আফ্রিদী (পাকিস্তান): ”বুমবুম আফিদী” নামে তিনি বেশি পরিচিত। সদা চঞ্চল, মারমার কাটকাট ব্যাটিং এর জন্য তিনি বেশি জনপ্রিয়। টি২০ যুগের আগে আফ্রিদী মানেই যেন বিনোদন। ছার ও ছক্কার ফুলঝুুরি। আমার মনে হয় সেই জনপ্রিয়তা থেকেই আইসিসি টি২০ ক্রিকেটের প্রচলন করেন।তিনি ১৯৯৬ সালে ৪ ঠা অক্টোবর শ্রীলংকার বিপক্ষে মাত্র ৩৭ বলে শতরান করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেন। তার রেকর্ডটি প্রায় ১৭ বছর টিকে ছিলো পরে কোরি এন্ডারসন ভাঙেন সেটি।

৪। সাকিব আল হাসান (বাংলাদেশ): বাংলাদেশের জান, বাংলাদেশের প্রাণ, সাকিব আল হাসান। তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেটের পোস্টারবয় এবং বাংলাদেশ ক্রিকেটের জীবন্ত কিংবদন্তী। নিঃসন্দেহে তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেটেরে সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়।তার হাত ধরে বাংলাদেশের ক্রিকেটে এসেছে এক নতুন বিপ্লব। বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে নিয়ে গেছেন এক অনন্য উচ্চতায়। একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিনি খুব তাড়াতাড়িই সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডার হতে চলেছেন। সদা হাস্যজ্বল মাগুরায় জন্ম নেওয়া ছেলেটিই হচ্ছেন সাকিব আল হাসান।

২০০৬ সালের ৬ ই আগস্ট জিম্বাবুয়ের হারারেতে অভিষেক হয় এবং আজ পর্যন্ত বীরদর্পে খেলে চলেছেন। সর্বশেষ ২০১৬ ক্রিকেট বিশ্বকাপে তিনি ৬০৬ রান করে সেরা ৩ জন রান সংগ্রাহকের তালিকায় ছিলেন। এবং তিনিই একমাত্র অলরাউন্ডার যিনি বিশ্বকাপে ১০০০+ রান এবং ৩০+ উইকেট নিয়েছেন। তিনিই সেরা ১০ জনের মধ্যে একমাত্র অলরাউন্ডার যিনি এখনো খেলে চলেছেন। ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত ২০৬ টি এক দিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে ৩৭.৮৬ গড়ে ৬৩২৩ রান করেছেন। স্ট্রাইক রেট ৮২.৭৫। তিনি এখন পর্যন্ত ৯ টি শতক এবং ৪৭ টি অর্ধশতকের মালিক। ব্যক্তিগত সর্বচ্চ রানের ইনিংস হচ্ছে অপরাজিত ১৩৪। তিনি ৫৭৪ টি ৪ এবং ৪২ টি ৬ মেরেছেন। তিনি ২০৬ ম্যাচে ২০৩ ইনিংসে ২৬০ টি উইকেটে পেয়েছেন। তার সেরা বোলিং হচ্ছে ২৯ রানে ৫ উইকেট। তিনি আরো ৫-৬ বছর খেললে পরিসংখ্যানে হয়তো সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডার হতে পারবেন।
৫। আব্দুর রাজ্জাক (পাকিস্তান): আব্দুর রাজ্জাক পাকিস্তানের একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অন্যতম সেরা

৬। ওয়াসিম আকরাম (পাকিস্তান): ওয়াসিম আকরাম পাকিস্তানের একদিনের আন্তর্জাতিক ত্রিকেটে সর্বকালের সেরা বোলার এবং সেরা একজন অলরাউন্ডার। বিশ্বের বাঘা বাঘা সব ব্যাটসমানের জন্য তিনি ত্রাশ ছিলেন।বিশ্বের সর্বকালের সেরা বোলারদের মধ্যে তিনি অন্যতম।

৭। কপিল দেব (ভারত): একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কপিল দেব ভারতের সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডার।

৮।শন পোলক (দঃআফ্রিকা): শন পোলক দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা অলরাউন্ডার। ১৯৯৬ সালের ৯ জানুয়ারী কেপটাউনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার একদিনের ম্যাচে অভিষেক হয় এবং ২০০৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারী ওয়েস্টইন্ডিজের বিপক্ষে জোহান্সবার্গে শেষ ম্যাচ খেলে অবসর গ্রহণ করেন।

৯। ক্রিস কোয়ার্নস (নিউজিল্যান্ড): ক্রিস কোয়ার্নস ছিলেন নিউজিল্যান্ড দলের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার।

১০। ক্রিস হ্যারিস (নিউজিল্যান্ড): ক্রিস হ্যারিস নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটে অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার।

Shakib al hasan is the best allrounder in ODI cricket.
ReplyDelete