Apr 29, 2020

নোটন নোটন পায়রাগুলি

নোটন নোটন পায়রাগুলি
ঝোটন বেঁধেছে,
ওপারেতে ছেলেমেয়ে
নাইতে নেমেছে।
দুই ধারে দুই রুই কাতলা
ভেসে উঠেছে,
কে দেখেছে কে দেখেছে
দাদা দেখেছে।
দাদার হাতে কলম ছিল
ছুড়ে মেরেছে,
উঃ বড্ড লেগেছে।



আমাদের গ্রাম - বন্দে আলী মিয়া

আমাদের গ্রাম
 - বন্দে আলী মিয়া
আমাদের ছোট গায়ে ছোট ছোট ঘর
থাকি সেথা সবে মিলে নাহি কেহ পর্।
পাড়ার সকল ছেলে মোরা ভাই ভাই
একসাথে খেলি আর পাঠশালায় যাই।
হিংসা ও মারামারি কভু নাহি করি
পিতামাতা গুরুজনে সাদা মোরা ভরি।
আমাদের ছোট গ্রাম মায়ের সমান
আলো দিয়ে বায়ু দিয়ে বাচাইছে প্রাণ।
মাঠ ভরা ধান আর জল ভরা দিঘী
চাদর কিরন লেগে করে ঝিকিমিকি।
আম গাছ জাম গাছ বাশঝাড় যেন
মিলে মিশে আছে ওরা আত্তিয় হেন।
সকালে সোনার রবি পুব দিকে
পাখি ডাকে বায়ু বয় নানা ফুল ফুটে।





স্বদেশ -আহসান হাবীব





স্বদেশ
-আহসান হাবীব
এই যে নদী নদীর জোয়ার
নৌকা সারে সারে,
একলা বসে আপন মনে
বসে নদীর ধারে
এই ছবিটি চেনা।
মনের মধ্যে যখন খুশি

এই ছবিটি আঁকি

এক পাশে তার জারুল গাছে
দুটি হলুদ পাখি,
এমনি পাওয়া এই ছবিটি
করিতে নয় কেনা।

মাঠের পরে মাঠ চলেছে
নেই যেন এর শেষ,
নানা কাজের মানুষগুলো
আছে নানান বেশ,
মাঠের মানুষ যায় মাঠে আর
হাটের মানুষ হাটে,
দেখে দেখে একটি ছেলের
সারাটা দিন কাটে।

এই ছেলেটির মুখ
সারা দেশের সব ছেলেদের
মুখেতে টুকটুক
কে তুমি ভাই,
প্রশ্ন করি যখন,
ভালোবাসার শিল্পী আমি,
বলবে হেসে তখন৷
এই যে ছবি এমনি আকা
ছবির মতো দেশ,
দেশের মাটি দেশের মানুষ
নানান রকম বেশ,
বাড়ি বাগান পাখ-পাখালি
সব মিলে এক ছবি,
নেই তুলি নেই রং, তবুও
আঁকতে পারি সবই৷

Apr 28, 2020

পারিব না কালী প্রসন্ন ঘোষ




পারিব না

কালী প্রসন্ন ঘোষ

পারিব না এ কথাটি বলিও না আর
কেন পারিবে না তাহা ভাব এক বার,
পাঁচজনে পারে যাহা,
তুমিও পারিবে তাহা,
পার কি না পার কর যতন আবার
এক বারে না পারিলে দেখ শত বার।

পারিব না বলে মুখ করিও না ভার,
ও কথাটি মুখে যেন না শুনি তোমার,
অলস অবোধ যারা
কিছুই পারে না তারা,
তোমায় তো দেখি নাক তাদের আকার
তবে কেন পারিব না বল বার বার?

জলে না নামিলে কেহ শিখে না সাঁতার
হাঁটিতে শিখে না কেহ না খেয়ে আছাড়,
সাঁতার শিখিতে হলে
আগে তব নাম জলে,
আছাড়ে করিয়া হেলা, হাঁট বার বার
পারিব বলিয় সুখে হও আগুসার।

কাজের লোক -নবকৃষ্ণ ভট্টাচার্য



কাজের লোক

-নবকৃষ্ণ ভট্টাচার্য

“মৌমাছি, মৌমাছি,
কোথা যাও নাচি' নাচি'
দাঁড়াও না একবার ভাই।''
“ওই ফুল ফোটে বনে,
যাই মধু আহরণে
দাঁড়াবার সময় তো নাই।''

“ছোট পাখি, ছোট পাখি,
কিচি-মিচি ডাকি ডাকি'
কোথা যাও বলে যাও শুনি?''
“এখন না ক'ব কথা,
আনিয়াছি তৃণলতা,
আপনার বাসা আগে বুনি।''

“পিপীলিকা, পিপীলিকা,
দল-বল ছাড়ি একা
কোথা যাও, যাও ভাই বলি।''
“শীতের সঞ্চয় চাই,
খাদ্য খুঁজিতেছি তাই
ছয় পায়ে পিল পিল চলি।''

সফদার ডাক্তার -হোসনে আরা

সফদার ডাক্তার
-হোসনে আরা
সফদার ডাক্তার
মাথা ভরা টাক তার
খিদে পেলেপানি খায় চিবিয়ে।
চেয়ারেতে রাত দিন
বসে গুনে দুই তিন
পড়ে বইআলোটারে নিভিয়ে।

ইয়া বড় গোফ তার
নাই তার জুড়ি দার
শুলে তারভুড়ি ঠেকে আকাশে।
নুন দিয়ে খায় পান
সারাক্ষন গায় গান
বুদ্ধিতেঅতি বড় পাকা সে।

রোগী এলে ঘরে তার
খুশিতে সে চার বার
কষে দেয় ডন আর কুস্তি।
তার পর রোগীটারে
গোটা দুই চাটি মারে
যেন তার সাথে কত দোস্তি।

ম্যালেরিয়া রোগী এলে
তার নাই নিস্তার
ধরে তারে দেয় কেচো গিলিয়ে।
আমাশার রোগী এলে
ই হাতে কান ধরে
পেটটারে ঠিক করে কিলিয়ে।

কলেরার রোগী এলে
দুপুরের রোদে ফেলে
দেয় তারে কুইনিন খাইয়ে।
তারপরে দুই টিন
পচা জলে তারপিন
ঢেলে তারে দেয় শুধু নাইয়ে।

ডাক্তার সফদার
নামডাক খুব তার
নামে গাও থরথরি কম্প,
নাম শুনে রোগীসব
করে জোরে কলরব
পিঠটান দেয় দিয়ে লম্ফ।

একদিন সক্ কাল
ঘটল কী জঞ্জাল
ডাক্তারে ধরে এসে পুলিশে,
হাত কড়া দিয়ে হাতে
নিয়ে গেল থানাতে
তারিখটা আষাঢ়ের উনিশে।

পণ্ডশ্রম– শামসুর রাহমান

https://thepeakplacebd.blogspot.com/2020/04/pondo-srom-samsur-rahman.html



পণ্ডশ্রম
-শামসুর রাহমান

এই নিয়েছে ঐ নিল যাঃ! কান নিয়েছে চিলে,
চিলের পিছে মরছি ঘুরে আমরা সবাই মিলে।

কানের খোঁজে ছুটছি মাঠে, কাটছি সাঁতার বিলে,
আকাশ থেকে চিলটাকে আজ ফেলব পেড়ে ঢিলে।

দিন-দুপুরে জ্যান্ত আহা, কানটা গেল উড়ে,
কান না পেলে চার দেয়ালে মরব মাথা খুঁড়ে।
কান গেলে আর মুখের পাড়ায় থাকল কি-হে বল?
কানের শোকে আজকে সবাই মিটিং করি চল।

যাচ্ছে, গেল সবই গেল, জাত মেরেছে চিলে,
পাঁজি চিলের ভূত ছাড়াব লাথি-জুতো কিলে।
সুধী সমাজ! শুনুন বলি, এই রেখেছি বাজি,
যে-জন সাধের কান নিয়েছে জান নেব তার আজই।

মিটিং হল ফিটিং হল, কান মেলে না তবু,
ডানে-বাঁয়ে ছুটে বেড়াই মেলান যদি প্রভু!
ছুটতে দেখে ছোট ছেলে বলল, কেন মিছে
কানের খোঁজে মরছ ঘুরে সোনার চিলের পিছে?

নেইকো খালে, নেইকো বিলে, নেইকো মাঠে গাছে;
কান যেখানে ছিল আগে সেখানটাতেই আছে।
ঠিক বলেছে, চিল তবে কি নয়কো কানের যম?
বৃথাই মাথার ঘাম ফেলেছি, পণ্ড হল শ্রম।

আম পাতা জোড়া-জোড়া

আম পাতা জোড়া-জোড়া
আম পাতা জোড়া-জোড়া,
মারবো চাবুক চড়বো ঘোড়া।
ওরে বুবু সরে দাঁড়া,
আসছে আমার পাগলা ঘোড়া।
পাগলা ঘোড়া ক্ষেপেছে,
চাবুক ছুঁড়ে মেরেছে।




https://thepeakplacebd.blogspot.com/2020/04/ampata-jora-jora.html



কানা বগীর ছা-খান মুহাম্মদ মইনুদ্দীন

কানা বগীর ছা
খান মুহাম্মদ মইনুদ্দীন

ঐ দেখা যায় তাল গাছ
ঐ আমাদের গাঁ।
ঐ খানেতে বাস করে
কানা বগীর ছা।

ও বগী তুই খাস কি?
পানতা ভাত চাস কি?
পানতা আমি খাই না
পুঁটি মাছ পাই না।

একটা যদি পাই
অমনি ধরে গাপুস গুপুস খাই।




আমাদের ছোট নদী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আমাদের ছোট নদী
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আমাদের ছোটো নদী চলে বাঁকে বাঁকে 
বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে।
পার হয়ে যায় গোরু, পার হয় গাড়ি,
দুই ধার উঁচু তার, ঢালু তার পাড়ি।

চিক্ চিক্ করে বালি, কোথা নাই কাদা,
একধারে কাশবন ফুলে ফুলে সাদা।
কিচিমিচি করে সেথা শালিকের ঝাঁক,
রাতে ওঠে থেকে থেকে শেয়ালের হাঁক।

আর-পারে আমবন তালবন চলে,
গাঁয়ের বামুন পাড়া তারি ছায়াতলে।
তীরে তীরে ছেলে মেয়ে নাইবার কালে
গামছায় জল ভরি গায়ে তারা ঢালে।

সকালে বিকালে কভু নাওয়া হলে পরে
আঁচল ছাঁকিয়া তারা ছোটো মাছ ধরে।
বালি দিয়ে মাজে থালা, ঘটিগুলি মাজে,
বধূরা কাপড় কেচে যায় গৃহকাজে।

আষাঢ়ে বাদল নামে, নদী ভর ভর
মাতিয়া ছুটিয়া চলে ধারা খরতর।
মহাবেগে কলকল কোলাহল ওঠে,
ঘোলা জলে পাকগুলি ঘুরে ঘুরে ছোটে।

দুই কূলে বনে বনে পড়ে যায় সাড়া,
বরষার উৎসবে জেগে ওঠে পাড়া।



https://thepeakplacebd.blogspot.com/2020/04/amader-soto-nodi-chole-bake-bake.html

হাসি -রোকনুজ্জামান খান

হাসি
-রোকনুজ্জামান খান

হাসতে নাকি জানেনা কেউ
কে বলেছে ভাই?
এই শোন না কত হাসির
খবর বলে যাই।

খোকন হাসে ফোঁকলা দাঁতে
চাঁদ হাসে তার সাথে সাথে
কাজল বিলে শাপলা হাসে
হাসে সবুজ ঘাস।
খলসে মাছের হাসি দেখে
হাসে পাতিহাঁস।

টিয়ে হাসে, রাঙ্গা ঠোঁটে,
ফিঙ্গের মুখেও হাসি ফোটে
দোয়েল কোয়েল ময়না শ্যামা
হাসতে সবাই চায়
বোয়াল মাছের দেখলে হাসি
পিলে চমকে যায়।

এত হাসি দেখেও যারা
গোমড়া মুখে চায়,
তাদের দেখে পেঁচার মুখেও
কেবল হাসি পায়।

চাঁদ মামা

আয় আয় চাঁদ মামা
আয় আয় চাঁদ মামা
টিপ দিয়ে যা,
চাঁদের কপালে চাঁদ
টিপ দিয়ে যা ।
ধান ভানলে কুঁড়ো দেব
মাছ কুটলে মুড়ো দেব,
চাঁদের কপালে চাঁদ
টিপ দিয়ে যা ।




আদর্শ ছেলে – কুসুম কুমারী দাশ

আদর্শ ছেলে
- কুসুম কুমারী দাশ

আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে
কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে?
মুখে হাসি বুকে বল, তেজে ভরা মন
‘মানুষ হইতে হবে’ – এই যার পণ৷

বিপদ আসিলে কাছে হও আগুয়ান
নাই কি শরীরে তব রক্ত, মাংস, প্রাণ?
হাত পা সবারই আছে, মিছে কেন ভয়?
চেতনা রয়েছে যার, সে কি পড়ে রয়?

সে ছেলে কে চায় বল, কথায় কথায়
আসে যার চোখেজল, মাথা ঘুরে যায়?
মনে প্রাণে খাট সবে, শক্তি কর দান,
তোমরা ‘মানুষ’ হলে দেশের কল্যাণ৷

আজিকার শিশু – বেগম সুফিয়া কামাল

আজিকার শিশু
– বেগম সুফিয়া কামাল

আমাদের যুগে আমরা যখন খেলেছি পুতুল খেলা
তোমরা এ যগে সেই বয়সেই লেখাপড়া কর মেলা।
আমরা যখন আকাশের তলে ওড়ায়েছি শুধু ঘুড়ি
তোমরা এখন কলের জাহাজ চালাও গগন জুড়ি।

উত্তর মেরু, দক্ষিণ মেরু সব তোমাদের জানা
আমরা শুনেছি সেখানে রয়েছে জিন ,পরী, দেও, দানা।
পাতালপুরীর অজানা কাহিনী তোমরা শোনাও সবে
মেরুতে মেরুতে জানা পরিচয় কেমন করিয়া হবে।

তোমাদের ঘরে আলোর অভাব কভূ নাহি হবে আর
আকাশ-আলোক বাঁধি আনি দূর করিবে অন্ধকার।
শস্য-শ্যামলা এই মাটি মা’র অঙ্গ পুষ্ট করে
আনিবে অটুট স্বাস্থ্য, সবল দেহ-মন ঘরে ঘরে।

তোমাদের গানে, কল-কলতানে উছসি উঠিবে নদী-
সরস করিয়া তৃণ ও তরুরে বহিবে সে নিরবধি
তোমরা আনিবে ফুল ও ফসল পাখি-ডাকা রাঙা ভোর
জগৎ করিবে মধুময়, প্রাণে প্রাণে বাঁধি প্রীতিডোর।

অধম ও উত্তম – সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত

অধম ও উত্তম
– সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত

কুকুর আসিয়া এমন কামড়
দিল পথিকের পায়
কামড়ের চোটে বিষদাঁত ফুটে
বিষ লেগে গেল তায়।

ঘরে ফিরে এসে রাত্রে বেচারা
বিষম ব্যথায় জাগে,
মেয়েটি তাহার তারি সাথে হায়
জাগে শিয়রের আগে।

বাপেরে সে বলে ভর্ৎসনা-ছলে
কপালে রাখিয়া হাত,
“তুমি কেন বাবা, ছেড়ে দিলে তারে
তোমার কি নেই দাঁত !”

কষ্টে হাসিয়া আর্ত কহিল
“তুই রে হাসালি মোরে,
দাঁত আছে বলে কুকুরের পায়
দংশি কেমন করে !

কুকুরের কাজ কুকুর করেছে
কামড় দিয়েছে পায়,
তা ব’লে কুকুরে কামড়ানো কি রে
মানুষের শোভা পায় ?”

কাজের লোক -নবকৃষ্ণ ভট্টাচার্য

কাজের লোক
-নবকৃষ্ণ ভট্টাচার্য

“মৌমাছি, মৌমাছি,
কোথা যাও নাচি’ নাচি’
দাঁড়াও না একবার ভাই।”
“ওই ফুল ফোটে বনে,
যাই মধু আহরণে
দাঁড়াবার সময় তো নাই।”

“ছোট পাখি, ছোট পাখি,
কিচি-মিচি ডাকি ডাকি’
কোথা যাও বলে যাও শুনি?”
“এখন না ক’ব কথা,
আনিয়াছি তৃণলতা,
আপনার বাসা আগে বুনি।”

“পিপীলিকা, পিপীলিকা,
দল-বল ছাড়ি একা
কোথা যাও, যাও ভাই বলি।”
“শীতের সঞ্চয় চাই,
খাদ্য খুঁজিতেছি তাই
ছয় পায়ে পিল পিল চলি।”

এমন যদি হতো -সুকুমার রায়

এমন যদি হতো
-সুকুমার রায়


এমন যদি হতো
ইচ্ছে হলে আমি হতাম
প্রজাপতির মতো
নানান রঙের ফুলের পরে
বসে যেতাম চুপটি করে
খেয়াল মতো নানান ফুলের
সুবাস নিতাম কতো।

এমন হতো যদি
পাখি হয়ে পেরিয়ে যেতাম
কত পাহাড় নদী
দেশ বিদেশের অবাক ছবি
এক পলকের দেখে সবই
সাতটি সাগর পাড়ি দিতাম
উড়ে নিরবধি।

এমন যদি হয়
আমায় দেখে এই পৃথিবীর
সবাই পেতো ভয়
মন্দটাকে ধ্বংস করে
ভালোয় দিতাম জগৎ ভরে
খুশির জোয়ার বইয়ে দিতাম
এই দুনিয়াময়।

এমন হবে কি?
একটি লাফে হঠাৎ আমি
চাঁদে পৌঁছেছি!
গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে
দেখে শুনে ভালো করে
লক্ষ যুগের অন্ত আদি
জানতে ছুটেছি।

ছুটি -রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

ছুটি
-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

মেঘেরে কোলে রোদ হেসেছে
বাদল গেছে টুটি,
আজ আমাদের ছুটি ও ভাই
আজ আমাদের ছুটি।

কী করি আজ ভেবে না পাই
পথ হারিয়ে কোন বনে যাই,
কোন মাঠে যে ছুটে বেড়াই
সকল ছেলে জুটি,
আজ আমাদের ছুটি ও ভাই
আজ আমাদের ছুটি।




https://thepeakplacebd.blogspot.com/2020/04/chuti-rabindranath-tagor.html

আম পাতা জোড়া-জোড়া

ছোট বেলার ছড়া
আম পাতা জোড়া-জোড়া

আম পাতা জোড়া-জোড়া,
মারবো চাবুক চড়বো ঘোড়া।
ওরে বুবু সরে দাঁড়া,
আসছে আমার পাগলা ঘোড়া।
পাগলা ঘোড়া ক্ষেপেছে,
চাবুক ছুড়ে মেরেছে।


খুকি ও কাঠবেড়ালি - কাজী নজরুল ইসলাম

https://thepeakplacebd.blogspot.com/2020/04/khuki-o-katbirali-kazi-nazrul-islam.html



খুকি ও কাঠবেড়ালি

- কাজী নজরুল ইসলাম

কাঠবেড়ালি! কাঠবেড়ালি! পেয়ারা তুমি খাও?
গুড়-মুড়ি খাও? দুধ-ভাত খাও? বাতাবি-নেবু? লাউ?
বেড়াল-বাচ্চা? কুকুর-ছানা? তাও-
ডাইনি তুমি হোঁৎকা পেটুক,
খাও একা পাও যেথায় যেটুক!
বাতাবি-নেবু সকলগুলো
একলা খেলে ডুবিয়ে নুলো!
তবে যে ভারি ল্যাজ উঁচিয়ে পুটুস পাটুস চাও?
ছোঁচা তুমি! তোমার সঙ্গে আড়ি আমার! যাও!
কাঠবেড়ালি! বাঁদরীমুখী! মারবো ছুঁড়ে কিল?
দেখবি তবে? রাঙাদাকে ডাকবো? দেবে ঢিল!
পেয়ারা দেবে? যা তুই ওঁচা!
তাই তোর নাকটি বোঁচা!
হুতমো-চোখী! গাপুস গুপুস
একলাই খাও হাপুস হুপুস!
পেটে তোমার পিলে হবে! কুড়ি-কুষ্টি মুখে!
হেই ভগবান! একটা পোকা যাস পেটে ওর ঢুকে!
ইস! খেয়ো না মস্তপানা ঐ সে পাকাটাও!
আমিও খুবই পেয়ারা খাই যে! একটি আমায় দাও!
কাঠবেড়ালি! তুমি আমার ছোড়দি’ হবে? বৌদি হবে? হুঁ!
রাঙা দিদি? তবে একটা পেয়ারা দাও না! উঃ!
এ রাম! তুমি ন্যাংটা পুঁটো?
ফ্রকটা নেবে? জামা দুটো?
আর খেয়ো না পেয়ার তবে,
বাতাবি-নেবুও ছাড়তে হবে!
দাঁত দেখিয়ে দিচ্ছ ছুট? অ’মা দেখে যাও!-
কাঠবেড়ালি! তুমি মর! তুমি কচু খাও!!

Apr 27, 2020

ভোর হলো-কাজী নজরুল ইসলাম



ভোর হলো/ প্রভাতী
কাজী নজরুল ইসলাম



ভোর হলো দোর খোল
খুকুমণি ওঠো রে
ঐ ডাকে জুঁই-শাখে
ফুল খুকি ছোট রে।


খুলি হাল তুলি পাল
ঐ তরি চলল
এইবার এইবার
খুকু চোখ খুলল।


আলসে নয় সে
উঠে রোজ সকালে,
রোজ তাই চাঁদা ভাই
টিপ দেয় কপালে।



(শিশুদের পাঠ্যবইয়ে ছড়াটি এতটুকু নেয়া হয়েছে তবে পূর্নাঙ্গ ছড়াটি নিচে দেয়া হলো।)




প্রভাতী
কাজী নজরুল ইসলাম



ভোর হলো
দোর খোল
           খুকুমণি ওঠো রে
ঐ ডাকে 

জুঁই শাখে
           ফুল খুকি ছোট রে!

           খুকুমণি ওঠো রে!

            
রবি মামা
দেয় হামা
             গায়ে রাঙা জামা ঐ,
দারোয়ান
গায় গান 
              শোনো ঐ, ‘রামা হৈ!
ত্যাজি নীড়
করে ভীড়
              ওড়ে পাখি আকাশে,
এন্তার
গান তার
            ভাসে ভোর বাতাসে।


চুলবুল
বুলবুল
          শিস দেয় পুষ্পে
এইবার
এইবার
          খুকুমনি উঠবে!

খুলি হাল 
তুলি পাল
            ঐ তরি চলল
এইবার 

এইবার
           খুকু চোখ খুলল।


আলসে
নয় সে
            উঠে রোজ সকালে,
রোজ তাই

চাঁদা ভাই
            টিপ দেয় কপালে।



উঠল
ছুটল
        ঐ খোকাখুকি সব,
‘উঠেছে
আগে কে,
         ঐ শোনো কলরব।

নাই রাত
মুখ হাত
            ধোও, খুকু জাগো রে! 
জয় গানে
ভগবানে
             তুষি, বর মাগো রে। 



প্রার্থনা- বেগম সুফিয়া কামাল

প্রার্থনা
সুফিয়া কামাল


তুলি দুই হাত করি মোনাজাত
হে রহিম রহমান
কত সুন্দর করিয়া ধরণী
মোদের করেছ দান,
গাছে ফুল ফল
নদী ভরা জল
পাখির কণ্ঠে গান
সকলি তোমার দান।



মাতা, পিতা, ভাই, বোন ও স্বজন
সব মানুষেরা সবাই আপন
কত মমতায় মধুর করিয়া
ভরিয়া দিয়াছ প্রাণ।



তাই যেন মোরা তোমারে না ভুলি
সরল সহজ সৎ পথে চলি
কত ভালো তুমি, কত ভালোবাস
গেয়ে যাই এই গান।




প্রার্থণা কবিতা বেগম সুফিয়া কামাল

ইচ্ছা-আহসান হাবীব


ইচ্ছা

-আহসান হাবীব



মনারে মনা কোথায় যাস?

বিলের ধারে কাটব ঘাস।
ঘাস কি হবে?
বেচব কাল,
চিকন সুতোর কিনব জাল।
জাল কি হবে?
নদীর বাঁকে
মাছ ধরব ঝাঁকে ঝাঁকে।
মাছ কি হবে?
বেচব হাটে,
কিনব শাড়ি পাটে পাটে।
বোনকে দেব পাটের শাড়ি,
মাকে দেব রঙ্গিন হাঁড়ি।



বাবুরাম সাপুড়ে


বাবুরাম সাপুড়ে
-সুকুমার রায়
     বাবুরাম সাপুড়ে,
     কোথা যাস্‌ বাপুরে?
আয় বাবা দেখে যা,
     দুটো সাপ রেখে যা !
যে সাপের চোখ নেই,
     শিং নেই নোখ্‌ নেই,
ছোটে না কি হাঁটে না,
     কাউকে যে কাটে না,
করে নাকো ফোঁস ফাঁস,
     মারে নাকো ঢুঁশঢাঁশ,
নেই কোন উৎপাত,
     খায় শুধু দুধ ভাত-
সেই সাপ জ্যান্ত
     গোটা দুই আনত ?
তেড়ে মেরে ডাণ্ডা
     ক'রে দেই ঠাণ্ডা ।