Jan 26, 2020

লো-প্রেসার বা নিম্ন রক্তচাপ হলে আপনার করণীয় কী?

লো প্রেসার কী?

লো প্রেসার বলতে সাধারণত সিস্টোলিক রক্তচাপ ৯০ মি.মি মার্কারি ও ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ ৬০ মি.মি মার্কারির নিচে হলে তাকে নিম্ন রক্তচাপ বা লো ব্লাড প্রেসার বলে থাকি।
অনেকেই রক্তচাপ কমে যাওয়া নিয়ে বা লো প্রেসার নিয়ে খুবই চিন্তিত থাকেন। নিম্নরক্তচাপ নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই। কেননা এটি উচ্চ রক্তচাপের মত ক্ষতিকর এবং দীর্ঘ মেয়াদী নয়।

লো প্রেসার বা নিম্ন রক্তচাপের কারণ?

কোনো কারণে পাণিশূণ্যতা হওয়া।
ডায়রিয়া বা অত্যাধিক বমি হওয়া।
খাবার ঠিকমতো বা সময়মতো না খাওয়া।
ম্যাল অ্যাবসরবশন বা হজমে দুর্বলতা।
কোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত থাকা।
শরীরে হরমনজনিত ভারসাম্যহীনতা।
রক্তশূণ্যতা।
শারীরিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত বা দুর্ঘটনার ফলে ফলে রক্তপাত ঘটলে এবং অপুষ্টিজনিত কারণে লো ব্লাড প্রেসার হতে পারে।
অতিরিক্ত পরিশ্রম, দুশ্চিন্তা, ভয় ও স্নায়ুর দুর্বলতা থেকে লো ব্লাড প্রেসার হতে পারে।
অপরিমিত ঘুমের কারণে মাথা ঘোরা বা লো ব্লাড প্রেসার হতে পারে।
গর্ভবতী মায়েদের প্রথম ছয়মাস হরনের প্রভাবে লো প্রেসার হতে পারে।
image of low pressure

নিম্নরক্তচাপের লক্ষণ:

মাথা ঘোরানো বা মাথা হালকা অনূভূত হওয়া
মাথা ঘুরে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।
বসা বা শোয়া থেকে হঠাৎ উঠে দাড়ালে মাথা ঘোরা বা ভারসাম্যহীনতা দেখা যাওয়া।
চোখে অন্ধকার দেখা বা ঝাপসা দেখা যাওয়া।
শারীরিক বা মানসিক অবসাদগ্রস্থতা দেখা দেওয়া।
কোনো কিছুতে মনোযোগ দিতে না পারা।
ঘনঘন শ্বাস প্রশ্বাস নেওয়া বা হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া।
খুব বেশি তৃষ্ঞা অনূভূত হওয়া।
অস্বাভাবিক দ্রুত হৃদকম্পন, নাড়ি বা পালসের গতি বেড়ে গেলে বুঝতে হবে আপনি লো ব্লাড প্রেসারে আক্রান্ত হয়েছেন।

লো প্রেসারের ক্ষতিকর দিক:

প্রেসার যদি খুব বেশি নেমে যায় তাহলে মস্তিষ্ক, কিডনি ও হৃদপিন্ড সঠিকভাবে রক্তপ্রবাহিত হতে পারেনা। ফলে অসুস্থতা দেখা যায়।
লো প্রেসার নাকি হাই প্রেসার-কোনটি বেশি ক্ষতিকর? দুটিই খারাপ, তবে প্রশ্ন  হলো কোনটি বেশি খারাপ? নিসন্দেহে লো প্রেসার বা নিম্ন রক্তচাপ বেশি খারাপ।কারণ,হঠাৎ প্রেসার খুব কমে গেলে বা কোন কারণে প্রেসার কমে গেলে তাৎক্ষনিক শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যেমন কিডনি, মস্তিষ্ক ইত্যাদি নষ্ট হয়ে যেতে পারে এবং মৃত্যুও হয়ে যেতে পারে।

লো প্রেসারের চিকিৎসা:

লো ব্লাড প্রেসারের কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। নিম্ন রক্তচাপের উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। যদি শরীরে পানিশূণ্যতা ও ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতার নিম্ন রক্তচাপ হয়, তাহলে শুধু খাবার স্যালাইন মুখে খেলেই লো প্রেসার ঠিক হয়ে যায়। চিকিতসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো। তবে যাদের দীর্ঘমেয়াদী নিম্নরক্তচাপ আছে তারা অবশ্যই চিকিতসকের পরামর্শ নিতে হবে।
লো প্রেসারের জন্য বাড়িতেই কিছু প্রাথমিক চিকিতসা নেওয়া যেতে পারে।
নিম্ন রক্তচাপের রোগীরা অনেকক্ষণ একই স্থানে বসে বা শুয়ে থাকবেন না।
অনেকক্ষণ ধরে বসে বা শুয়ে থাকার পরে ওঠার সময় সাবধানে ও ধীরে ধীরে উঠুন।
ঘনঘন হালকা খাবার খান।
বেশি সময় খালি পেটে থাকলে রক্তচাপ আরও কমে যেতে পারে।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন।

এছাড়াও নিম্নের খাবার গুলো আপনার প্রেসার স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করবে।
কফি : আপনার হঠাৎ করে লো প্রেসার দেখা দিলে এক কাপ কফি খেতে পারেন। এতে আপনার লো ব্লাড প্রেসার থেকে প্রেসার কিছুটা হলেও বাড়তে সাহায্য করবে।
লবণ-স্যালাইন : লবণে আছে সোডিয়াম। তা রক্তচাপ বাড়ায়। এজন্য প্রেসার লো হলে ওরস্যালাইন খেলে দ্রুত প্রেসার বাড়তে সাহায্য করে ।
কিশমিশ : কিসমিস একটি সুস্বাদু এবং লো প্রেসার রোগীদের জন্য উপকারী হিসেবে পরিচিত। প্রতিদিন কয়েকটি করে কিসমিস খেতে পারেন।
পুদিনা : পুদিনা পাতার বহু উপকার আছে। এতে আছে ভিটামিন ‘সি’, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম ও প্যান্টোথেনিক উপাদান,যা দ্রুত ব্লাড প্রেসার বাড়াতে সাহায্য করে এবং সঙ্গে সঙ্গে মানসিক অবসাদও দূর করে।
মধুও দুধ : মধু আল্লাহর একটি অনন্য নেয়ামত।  দুধে মধু মিশিয়ে খেলে লো প্রেসার থেকে কিছুটাও উপকার পাবেন।
ডিমঃ ডিম খেতে পারেন। মুরগির চেয়ে হাঁসের ডিম এক্ষেত্রে বেশি সাহায্যকারী।
পোস্টটি একাধিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ থেকে গৃহীত এবং পরিমার্জিত।

No comments:

Post a Comment